১. EB-2 ও EB-3 ইমিগ্রেন্ট ভিসা (Employment-Based Green Cards)

EB-2 এবং EB-3 ক্যাটাগরি হলো যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের জন্য Employment-Based ইমিগ্র্যান্ট ভিসা যা আপনাকে গ্রিন কার্ড পাওয়ার পথ তৈরি করে দেয়। এই দুটি ভিসা সাধারণত কোনো নিয়োগদাতা (employer) কর্তৃক স্পনসরশিপের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়।

EB-2 ভিসা – “Advanced Degree or Exceptional Ability”

যোগ্যতা:

• আবেদনকারীর ন্যূনতম মাস্টার্স ডিগ্রি (বা ব্যাচেলর + ৫ বছরের অভিজ্ঞতা)

• অথবা ব্যতিক্রমধর্মী দক্ষতা (Exceptional Ability) – যেমন গবেষণা, বিজ্ঞান, ব্যবসা বা আর্টসে বিশেষ অবদান।

National Interest Waiver (NIW):
এই বিশেষ ক্যাটাগরির অধীনে আপনি নিয়োগদাতা ছাড়াও সরাসরি আবেদন করতে পারেন যদি প্রমাণ করতে পারেন যে আপনার কাজ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ।

কার জন্য উপযুক্ত:

• পেশাজীবী, গবেষক, প্রফেসর, ইঞ্জিনিয়ার বা স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মরত যাদের উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে।

EB-3 ভিসা – “Skilled Workers, Professionals, and Other Workers”

যোগ্যতা:

• কমপক্ষে ২ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা (Skilled Workers)

• ব্যাচেলর ডিগ্রি (Professionals)

• অথবা অদক্ষ শ্রমিক (Other Workers) – যাদের বিশেষ দক্ষতা নেই কিন্তু কাজের অফার রয়েছে।

কার জন্য উপযুক্ত:

• নানান প্রফেশনাল ফিল্ডে কাজ করা দক্ষ কর্মী, যারা নিয়োগদাতার অফারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান।

চাকরির অফার আবশ্যক:
EB-3 ক্যাটাগরিতে আবেদনের জন্য অবশ্যই একটি বৈধ নিয়োগদাতার কাজের অফার থাকতে হবে এবং নিয়োগদাতাকে PERM (Labour Certification) পাস করতে হবে।

২. H-1B নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা – Skilled Worker Visa

H-1B হলো একটি অস্থায়ী (non-immigrant) ওয়ার্ক ভিসা যা আপনাকে যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করার সুযোগ দেয়।

যোগ্যতা:

• আবেদনকারীর ন্যূনতম ব্যাচেলর ডিগ্রি থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে।

• নিয়োগদাতা কর্তৃক স্পনসরড পজিশন থাকতে হবে।

মেয়াদ:

• প্রথমে ৩ বছর এবং পরবর্তীতে সর্বোচ্চ ৬ বছর পর্যন্ত নবায়নযোগ্য।

H-1B থেকে গ্রিন কার্ড:
H-1B থাকা অবস্থায় আপনি EB-2 বা EB-3 ভিসার মাধ্যমে গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।

কার জন্য উপযুক্ত:

• আইটি প্রফেশনাল, ইঞ্জিনিয়ার, হিসাবরক্ষক, আর্কিটেক্ট প্রভৃতি।

৩. ভিসাগুলোর তুলনা

৪. আবেদন প্রক্রিয়া

EB-2/EB-3:

1. PERM Labor Certification – নিয়োগদাতা প্রমাণ করে মার্কিন শ্রমবাজারে ওই চাকরির জন্য স্থানীয় কোনো প্রার্থী নেই।

2. I-140 Petition – নিয়োগদাতা USCIS-এ আবেদন করে।

3. Visa Bulletin অনুসারে অপেক্ষা – নির্দিষ্ট দেশভিত্তিক কোটা।

4. Adjustment of Status (I-485) – যদি আপনি USA-তে থাকেন, নতুবা দূতাবাসে ইমিগ্র্যান্ট ভিসার জন্য আবেদন।

H-1B:

1. নিয়োগদাতা আবেদন জমা দেয় (April-এ) – প্রতি বছর কোটা সীমিত (65,000 + 20,000 Master’s cap)।

2. Lottery system – যাদের নাম আসে তারা আবেদন প্রক্রিয়া চালাতে পারে।

3. US Entry ও কাজ শুরু (October থেকে)।

৫. কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

• EB ভিসার কোটা: প্রতি দেশ থেকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট সংখ্যা – বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অপেক্ষার সময় তুলনামূলক কম।

• H-1B Lottery: অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ, তাই বিকল্প পরিকল্পনা জরুরি।

• Spouse ও Family: EB ও H-1B উভয় ক্যাটাগরিতেই স্ত্রী/স্বামী এবং সন্তানরা নির্ভরশীল ভিসা (H-4 বা EAD) পেতে পারে।

৬. আপনি কোন ভিসার জন্য উপযুক্ত?

• আপনি যদি উচ্চশিক্ষিত হন ও গবেষণা বা বিশেষ দক্ষতা থাকে, তবে EB-2 (বা NIW) হতে পারে আপনার জন্য।

• আপনি যদি দক্ষ কর্মী হন এবং কাজের অফার থাকে, তবে EB-3 আপনার জন্য উপযুক্ত।

• আপনি যদি অস্থায়ী ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করতে চান এবং আপনার ডিগ্রি ও কাজের অফার আছে, তবে H-1B হতে পারে প্রথম ধাপ।

৭. আমাদের পরামর্শ

যুক্তরাষ্ট্রের স্কিল্ড মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া জটিল হলেও সঠিক গাইডলাইন ও পরিকল্পনার মাধ্যমে এটি সম্ভব। নিজের প্রোফাইল মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ — কোন ক্যাটাগরিতে আবেদন করবেন, কখন করবেন এবং কীভাবে নথিপত্র প্রস্তুত করবেন।

বিশেষজ্ঞ কনসালট্যান্টদের সহায়তায় আপনি নিজের জন্য সঠিক পথটি নির্ধারণ করতে পারবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে আপনার ক্যারিয়ার ও ভবিষ্যৎ গড়তে পারবেন।