১৮৯ ভিসা (স্কিলড ইন্ডিপেনডেন্ট ভিসা) কী?

১৮৯ ভিসা হচ্ছে একটি পয়েন্ট বেসড স্কিলড মাইগ্রেশন ভিসা, যেখানে প্রার্থী কোনো রাজ্য বা অঞ্চলের নোমিনেশন ছাড়াই সরাসরি অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে আবেদন করতে পারেন। এই ভিসায় প্রাপ্ত ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস এবং কাজ করার অধিকার পান।

বৈশিষ্ট্য:

• রাজ্য বা টেরিটোরির নোমিনেশন প্রয়োজন নেই।

• প্রার্থীকে অস্ট্রেলিয়ার নির্ধারিত পয়েন্ট সিস্টেম অনুযায়ী ন্যূনতম ৬৫ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে।

• পয়েন্টের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে আমন্ত্রণ (Invitation to Apply) দেওয়া হয়।

• ভিসা পাওয়ার পর যেকোনো জায়গায় বসবাস ও কাজের স্বাধীনতা।

১৯০ ভিসা (স্কিলড নোমিনেটেড ভিসা) কী?

১৯০ ভিসা হলো স্কিলড মাইগ্রেশন ভিসার আরেকটি প্রকার, যেখানে আবেদনকারীকে অস্ট্রেলিয়ার একটি নির্দিষ্ট রাজ্য বা টেরিটোরি সরকার নোমিনেট করে। এই নোমিনেশন পাওয়ার পর ফেডারেল সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। নোমিনেশন পাওয়ার জন্য রাজ্যের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়।

বৈশিষ্ট্য:

• রাজ্য বা টেরিটোরির নোমিনেশন আবশ্যক।

• রাজ্যের নির্ধারিত শর্ত যেমন অবস্থান, কর্মসংস্থান ইত্যাদি মানতে হয়।

• পয়েন্ট সিস্টেমে কমপক্ষে ৬৫ পয়েন্ট থাকা জরুরি।

• ভিসাধারক নির্দিষ্ট রাজ্যে কিছু সময় বসবাস করার প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন।

• নোমিনেশন প্রাপ্তির ফলে অতিরিক্ত ৫ পয়েন্ট পাবেন যা পয়েন্ট স্কোর বাড়ায়।

১৮৯ ও ১৯০ ভিসার জন্য যোগ্যতার শর্ত

১. যোগ্য পেশার তালিকা
উভয় ভিসার জন্য প্রার্থীকে অস্ট্রেলিয়ার স্কিলড ইমিগ্রেশন পেশার তালিকা (MLTSSL বা STSOL) থেকে একটি পেশা নির্বাচন করতে হবে।

২. বয়স
সাধারণত আবেদনকারীর বয়স ৪৫ বছরের নিচে হতে হবে।

৩. শিক্ষাগত যোগ্যতা
প্রার্থীকে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠান থেকে উপযুক্ত ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট থাকতে হবে।

৪. অভিজ্ঞতা
নির্দিষ্ট পেশার ক্ষেত্রে প্রাক্টিক্যাল কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়, যা সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছর।

৫. ইংরেজি দক্ষতা
IELTS, PTE, TOEFL ইত্যাদি পরীক্ষায় নির্দিষ্ট ন্যূনতম স্কোর থাকতে হবে। উদাহরণস্বরূপ IELTS এ সাধারণত ৬.০ ব্যান্ড প্রয়োজন।

৬. পয়েন্ট সিস্টেমে পাস
কমপক্ষে ৬৫ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে, যা বয়স, শিক্ষা, কাজের অভিজ্ঞতা, ইংরেজি দক্ষতা ও অন্যান্য ফ্যাক্টর দ্বারা নির্ধারিত হয়।

১৮৯ ও ১৯০ ভিসার মধ্যে প্রধান পার্থক্য

১৮৯ ও ১৯০ ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

১. প্রাথমিক যাচাই
আপনার পেশা, বয়স, শিক্ষা ও কাজের অভিজ্ঞতা যাচাই করুন।

২. স্কিল এসেসমেন্ট
আপনার পেশার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্কিল এসেসমেন্ট করান।

৩. EOI (Expression of Interest) সাবমিট করুন
SkillSelect ওয়েবসাইটে EOI জমা দিন। এখানে আপনি আপনার পয়েন্ট স্কোর, পছন্দের রাজ্য ইত্যাদি উল্লেখ করবেন।

৪. নোটিফিকেশন ও আমন্ত্রণ পত্র (Invitation to Apply)
আপনি যদি যথেষ্ট পয়েন্ট পান, তাহলে ফেডারেল বা রাজ্য সরকার থেকে আমন্ত্রণ পত্র পাবেন।

৫. ভিসা আবেদন
নোটিফিকেশন পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করুন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিন।

৬. ভিসা অনুমোদন ও প্রবাস জীবন শুরু
ভিসা পাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করুন।

অতিরিক্ত তথ্য ও টিপস

• নোমিনেশন চয়েস: ১৯০ ভিসার জন্য রাজ্য নোমিনেশন পেতে আপনার পেশা সেই রাজ্যের স্কিলড লিস্টে থাকতে হবে এবং তারা যেসব পেশায় অভাব অনুভব করে সেই অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।

• পরিবারের অন্তর্ভুক্তি: উভয় ভিসায় পরিবারের সদস্যদেরও অন্তর্ভুক্ত করা যায়, যারা প্রাথমিক আবেদনকারীর সঙ্গে বসবাস ও কাজের অধিকার পায়।

• ভিসা বৈধতা: পিআর ভিসার মাধ্যমে আপনি অস্ট্রেলিয়ায় সীমাহীন সময় বসবাস ও কাজ করতে পারবেন, পাশাপাশি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

• নিরাপত্তা ও সেবা: অস্ট্রেলিয়া উচ্চমানের জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার সুযোগ দেয়।

অস্ট্রেলিয়ার ১৮৯ এবং ১৯০ ভিসা উভয়ই দক্ষ প্রবাসীদের জন্য স্থায়ী বসবাসের সুযোগ এনে দেয়। আপনার পরিস্থিতি, পেশা ও আগ্রহ অনুসারে সঠিক ভিসা নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। ১৮৯ ভিসা স্বাধীনতার সুযোগ বেশি দেয়, যেখানে ১৯০ ভিসা রাজ্য থেকে সমর্থন পাওয়া যায় ও অতিরিক্ত পয়েন্ট সুবিধা দেয়। আপনার আবেদন সফল করতে অবশ্যই দক্ষ পরামর্শ ও পরিকল্পনা প্রয়োজন।

আজই শুরু করুন আপনার অস্ট্রেলিয়া পিআর যাত্রা – সঠিক তথ্য ও প্রস্তুতির মাধ্যমে আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করুন!